Sunday, 1 January 2017

ক্যালেন্ডারের

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের
আগে ছিল জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের
প্রচলন। জুলিয়ান ক্যালেন্ডারেরও
আগে রোমানরা গ্রিক
পঞ্জিকা অনুযায়ী বছর ধরত ৩০৪ দিনে।
যাকে ১০ মাসে ভাগ করা হয়েছিল।
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির জন্ম তখনও
হয়নি। মার্চ ছিল বছরের প্রথম মাস। এক সময়
রাজা পম্পিলিয়াস দেখলেন ৩০৪ দিন
হিসাবে বছর করলে প্রকৃতির
সঙ্গে মিলছে না। খৃস্টপূর্ব ৭০০
সালে তিনি বছরের সাথে যোগ
করলেন আরও ৬০ দিন। বছরের দিন
বৃদ্ধি পেল ঠিকই সঙ্গে সমস্যাও
বৃদ্ধি পেল ঋতুর চেয়ে সময়
এগিয়ে আছে তিন মাস। তখনই জুলিয়াস
সিজার ঢেলে সাজালেন বছরকে। নতুন
দু'টি বছর জানুয়ারি ও
ফেব্রুয়ারিকে নিয়ে এলেন বছরের প্রথম
দিকে।
✿January (জানুয়ারি) : রোমে ‘জানুস'
নামক এক দেবতা ছিল।
রোমবাসী তাকে সূচনার
দেবতা বলে মানত। যে কোন কিছু করার
আগে তারা এ দেবতার নাম স্মরণ করত।
তাই বছরের প্রথম নামটিও তার
নামে রাখা হয়েছে।
✿February (ফেব্রুয়ারি) : রোমান
দেবতা ‘ফেব্রুস'-এর নাম
অনুসারে ফেব্রুয়ারি মাসের নামকরণ
করা হয়েছে।
✿March (মার্চ) : রোমান যুদ্ধ-
দেবতা ‘মরিস' এর
নামানুসারে তারা মার্চ মাসের
নামকরণ করেন।
✿April (এপ্রিল) : বসন্তের দ্বার
খুলে দেয়াই এপ্রিলের কাজ। তাই কেউ
কেউ ধারণা করেন ল্যাটিন শব্দ
‘এপিরিবি' (যার অর্থ খুলে দেয়া)
হতে এপ্রিল এসেছে।
✿May (মে) : রোমানদের
আলোকে দেবী ‘মেইয়ার'-এর
নামানুসারে মাসটির নাম রাখা হয়
মে।
✿June (জুন): রোমানদের নারী, চাঁদ ও
শিকারের দেবী ছিলেন ‘জুনো'। তার
নামেই জুনের সৃষ্টি।
✿July (জুলাই) : জুলিয়াস সিজারের
নামানুসারে জুলাই মাসের নামকরণ।
মজার ব্যাপার হচ্ছে বছরের
প্রথমে জানুয়ারি ও
ফেব্রুয়ারিকে স্থান
দিয়ে তিনি নিজেই
নিজেকে দূরে সরিয়ে দেন।
✿August (আগস্ট) : জুলিয়াস সিজার
বছরকে ঢেলে সাজানোর পর আগস্ট
মাসটি তার নিজের নামে রাখার জন্য
সিনেটকে নির্দেশ দেন। সেই থেকে শুরু
হয় আগস্ট মাসের পথচলা।
✿September (সেপ্টেম্বর) : সেপ্টেম্বর
শব্দের শাব্দিক অর্থ সপ্তম মাস। কিন্তু
সিজার বর্ষ পরিবর্তনের পর
তা এসে দাঁড়ায় নবম মাসে। তারপর
এটা কেউ পরিবর্তন করেনি।
✿October (অক্টোবর) : ‘অক্টোবরের' শাব্দিক
অর্থ বছরের অষ্টম মাস। সেই অষ্টম মাস
আমাদের ক্যালেন্ডারের এখন স্থান
পেয়েছে দশম মাসে।
✿November (নবেম্বর) : ‘নভেম' শব্দের অর্থ নয়।
সেই অর্থানুযায়ী তখন নবেম্বর ছিল নবম
মাস। জুলিয়াস সিজারের কারণে আজ
নবেম্বরের স্থান এগারতে।
✿December (ডিসেম্বর) : ল্যাটিন শব্দ
‘ডিসেম' অর্থ দশম। সিজারের বর্ষ
পরিবর্তনের
আগে অর্থানুযায়ী এটি ছিল দশম মাস।
কিন্তু আজ আমাদের কাছে এ মাসের
অবস্থান ক্যালেন্ডারের শেষ প্রান্তে।
---------------------------✿-----------------
---------------
প্রত্যেকটি দিনের নামের অর্থ ভিন্ন
রকম। আমাদের সকলের
নখদর্পণে সাতদিনের নাম। কিন্তু এই
সাতদিনের নামের উৎপত্তিস্থল
কোথায়, কিভাবে হলো তা আমাদের
সকলের অজানা বা আমরা এই
সম্পর্কে অবগত নই। তাহলে চলুন,
আমরা নামগুলোর ইতিহাস
থেকে ঘুরে আসি।
✿শনিবার : ইংরেজিতে বলা হয়
Saturday : সে অনেক পুরনো কথা। রোমান
সাম্রাজ্যের আমলের লোকেরা এই
বলে বিশ্বাস করত যে, চাষাবাদের জন্য
‘স্যাটান; নামের একজন দেবতা আছেন।
যার হাতে আবহাওয়া ভালো খারাপ
করা লেখাটি আছে। তাই তাকে সম্মান
করার জন্যই তার নামে একটি গ্রহের
সাথে সপ্তাহের একটি দিনের নাম
স্যাটনি ডেইজ রাখা হয়েছে। যার অর্থ
হচ্ছে স্যাটানের দিন।
বর্তমানে তা ‘স্যাটারডে' নামেই
পরিচিত।
✿রবিবার : ইংরেজিতে বলা হয় Sunday :
অনেকদিন আগের কথা, দক্ষিণ ইউরোপের
সাধারণ ‘লোকেরা বিশ্বাস করত
এবং ভাবত যে একজন দেবতা রয়েছেন
যিনি শুধুমাত্র আকাশে গোলাকার
আলোর বল অংকন করেন। ল্যাটিন ভাষায়
যাকে বলা হয় ‘সলিছ'। এর থেকেই সলিছ
ডে অর্থাৎ সূর্যের দিন। উত্তর ইউরোপের
লোকেরা এই দেবতাকে ডাকত
‘স্যানেল ডেইজ' নামে।
যা পরবর্তীতে বর্তমান সান ডে-
তে রূপান্তরিত হয়।
✿সোমবার : ইংরেজিতে বলা হয়
Monday : এই নামের সাথেও দক্ষিণ
ইউরোপের লোকেরা জড়িত। রাতের
বেলায় আকাশের গায়ে রূপালী বল
দেখে তারা ডাকত ‘লুনা' নামে।
ল্যাটিন শব্দ লুনা ডেইস। উত্তর ইউরোপের
লোকেরা ডাকত মোনান ডেইজ। এ
মানডে কিন্তু মোনান ডেজ
থেকে রূপান্তর হয়।
✿মঙ্গলবার : ইংরেজি রূপ Tuesday :
আগেকার রোমান রাজ্যের
লোকেরা বিশ্বাস করত যে, টিউ নামক
একজন দেবতা আছেন যিনি যুদ্ধ
দেখাশুনা করেন। তারা ভাবত
যারা টিউকে আশা করত টিউ
তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করত
যুদ্ধের ময়দানে এবং যারা পরলোক গমন
করেছে তাদেরকে টিউ পাহাড়
থেকে নেমে একদল
মহিলা কর্মী নিয়ে বিশ্রামের
জায়গা ঠিক করত। তারা একে ডাকত
‘ডুইস' নামে। যার ইংরেজি অর্থ টুইস ডে।
✿বুধবার : ইংরেজি রূপ Wednesday :
দেবতাদের
মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ‘উডেন'
বলে দক্ষিণ ইউরোপের লোকেরা ভাবত।
তিনি সারা দিন ঘুরে জ্ঞান লাভ
করতেন যার জন্য তার একটি চোখ
হারাতে হয়েছিল। এই
হারানো চোখকে তিনি সবসময়
লম্বাটুপি দিয়ে আবৃত করে রাখতেন।
দুটো পাখি উডেনের
গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করত,
তারা উডেনের কাঁধে বসে থাকত।
রাতে তারা সারা পৃথিবীর
ঘটনাবলি উডেনকে শুনাত। এভাবেই
উডেন সারা পৃথিবীর খবর শুনতে সক্ষম হন।
এজন্য লোকেরা নাম রাখল ওয়েডনেস
ডেইস। যা বর্তমান ওয়েডনেস
ডে নামে পরিচিত।
✿বৃহস্পতিবার : ইংরেজি রূপ Thursday :
বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকানোর সম্পর্ক
না জানার ফলে মানুষ মনে করত যে,
বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকানোর জন্য একজন
দেবতা দায়ী। তারা শুধু
আলো জ্বলতে ও বিদ্যুৎ চমকাতে দেখত।
তারা দেবতার নাম রাখে থর। তাদের
মধ্যে এই অন্ধ বিশ্বাস ছিল যে,
দেবতা থর যখন রাগান্বিত হন তখন
তিনি রাগে আকাশে একটা হাতুড়ি নিক্ষেপ
করেন দু'টি ছাগলের গাড়িতে বসে।
ছাগলের গাড়ি চাকার শব্দ
হচ্ছে বজ্রপাত ও হাতুড়ির আঘাত
হচ্ছে বিদ্যুৎ চমকানো। থরের প্রতি সম্মান
রক্ষার্থে তারা সপ্তাহের
একটি দিনের নাম রাখেন থার্স ডেইস।
যাকে আজ আমরা থার্স
ডে বা বৃহস্পতিবার বলে ডাকি।
✿শুক্রবার : ইংরেজিতে বলা হয় Friday :
ওডিন একজন শক্তিশালী দেবতা। তার
স্ত্রী দেবী ফ্রিগ ছিলেন ভদ্র
এবং সুন্দরী। ওডিনের পাশে সব সময় তার
স্ত্রী থাকতেন। পৃথিবীকে দেখতেন,
প্রকৃতিকে উপভোগ করতেন, প্রকৃতির
দেবী ভালোবাসা ও বিবাহের
দেবীও ছিলেন ফ্রিগ। এই জন্য
লোকেরা বাকি একটি দিনের নাম
‘ফ্রিগ ডেইজ' বা ফ্রাইডে রাখেন।

No comments:

Post a Comment